অলীক বিভ্রম


জানালায় ভারী পর্দা, বারান্দার দরজাটা লাগানো। এরপরেও রোদ প্রবেশ করেছে ঘরে, বোঝা যায় তীব্রতা অনেক। সময় কত এখন? ঠিক সামনের দেয়ালে ঝুলানো ঘড়ি জানায়, এগারটা বিশ। রোজকার মত থেমে থেমে মায়ের ঘুম ভাঙ্গানো সংগীত শোনা যায় দরজার ওপাশে, মাঝে মাঝে দরজায় সিম্ফনি – ওঠ, ওঠ, ঐ ওঠ। খেয়ে আবার ঘুমা। তরকারী নষ্ট হয়ে যায়। ওঠ, ওঠ, ঐ ওঠ।
আম্মা, কয়টা বাজে?
কোন জবাব আসে না।
ও মা, কয়টা বাজে?
কেউ উত্তর দেয় না। মায়ের সংগীত দুনিয়ার অপর প্রান্ত থেকেও শোনা যাবে, কিন্তু মা শুনতে পায় না ছেলের অনর্থক প্রশ্ন। খানিকক্ষন পর আবার, ওঠ, ওঠ, ঐ ওঠ। খেয়ে আবার ঘুমা। তরকারী নষ্ট হয়ে যায়।

দুনিয়াতে সবথেকে কষ্টকর কাজ কি?
তন্ময়ের উত্তর – ঘুম থেকে উঠা।
দুনিয়ার সবথেকে আরামের কাজ কি?
তন্ময়ের উত্তর – ঘুমানো।


দরজা খুলে বারান্দায় দাঁড়ায় তন্ময় – প্রচন্ড রোদ! বাইরে আজকে সেইরকম গরম পড়েছে নিশ্চয়! এরকম একটা বাজে দিনে ঘরে বসে স্রেফ ঝিমায়ে ঝিমায়ে দিন কাটানো যাবে ভাবলেই ঘুম থেকে উঠার ব্যথা কমে যায়। মোবাইল অন করে তন্ময়, বিরক্ত চোখে স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে আছে। এই যন্ত্রটাকে সে একরকম ঘৃণা করে। ঘৃণার পিছনে একাধিক কারণ। প্রথম এবং প্রধানতম কারণ – বাংলালিংক আর কিউবি। ইনবক্স খুললে যে মেসেজগুলো দেখা যাবে – বাংলালিংক, নিউ অফার, ফাইন্ড জব, ইন্টারনেট, স্টান্ডার্ড চাটার্ড ইত্যাদি এবং ইত্যাদি। এদের মেসেজ আর কলে তন্ময় প্রচন্ড বিরক্ত। এত বিরক্তির পিছনে আছে যে সম্পূরক কারণ – তার মোবাইলে ইন্টারেস্টিং কেউ কল বা মেসেজ করে না, বহুদিন ধরেই করে না। তবে আজাইরা ফোন আসে রাত গভীর হলে – হ্যালোওওওওওওওওওও, ভাই এইটা কোন জায়গা ভাই? মাতাল, বেতাল, রঙ নাম্বার থেকে ফোন চলে আসে। তন্ময় – যার সবথেকে প্রিয় কাজ ঘুম, সেই ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে মাথায় রক্ত চড়ে যায়। অতএব ফোন বন্ধ, নো লস, নো গেইন, নো পেইন।


তন্ময় অবাক হয়ে দেখে, ওয়ান আনরিড মেসেজ, সেইসাথে মিসকল এলার্ট জানাচ্ছে – মাত্র দশবার একই নাম্বার থেকে কেউ কল করেছিল। মেসেজ করেছে একই অচেনা নাম্বার, এ ভেরী ভেরী ইন্টারেস্টিং মেসেজ, বাংলালিঙ্ক/কিউবি কেউ পাঠায় নি। এমনকি অফিসের এডমিন সাহবে বা কোন কলিগ – বন্ধু নয়। নম্বরটা – ০১৬৭১... এয়ারটেল... টানে... পাশে...
“সকাল দশটা, কার্জন হল, পুকুর পাড়, দেখা হবে”
হোয়াট দ্যা ফা... কে এই ফাইজলামি টা করল? হয় সানী নাইলে সজীব। শা...
ঐ ওঠ। খেয়ে আবার ঘুমা। তরকারী নষ্ট হয়ে যায়। ওঠ, ওঠ, ঐ ওঠ।
আম্মা, আমি উঠছি, আসতেছি এক মিনিট।
রিং বাজে, রিং বাজে, রিং বাজে। ফোন রিসিভড। কিছু বলার আগে হিংস্র গলায় কেউ কথা বলে ওঠে। ভর দুপুরে শরীরের রক্ত হিম হয়ে যায়।
ঐ তোমার ফোন বন্ধ কেন? কত্ত বড় সাহস ফোন বন্ধ করে রাখে দুপুর বেলা পর্যন্ত! আমার মেসেজ পাইছ?
জ্বী মেসেজ... হ্যা পাইছি... আপনি আপনি কে? - তন্ময় হাই ভোল্টেজে শকড। নরমাল হতে সময় লাগবে।
আমি কে সেটা সামনে আসলে দেখতে পারবা। আর তুমি কানে শোনো না? আমি তুমি করে বলতেছি আর তুমি আমাকে আপনি করে বলতেছ কোন দুঃখে? গাঁধা কোথাকার!
আচ্ছা তুমি কে? আমার নাম্বার কই পাইছ?
আবার প্রশ্ন করে ফাউল। দুই ঘন্টা ধরে দাঁড়ায় আছি। তুমি দশ মিনিটের মধ্যে আসবা। তুমি কোথায়?
আ আমি আমার রুমে। এখন আসতে পারব না। কিছু খাই নাই।
মানে কি? ভরদুপুরে ঘুম ভাঙ্গসে তোমার? তোমাকে আমি খাওয়াবো। জলদি আসো।
তন্ময়ের মাথা ঝিমঝিম করে, আরে আমি কেন আসব?
উত্তর আসে না অপর পাশ থেকে, লাইন কেটে দিয়েছে।


বাসে উঠেছে তন্ময়, তার সামনে এক মেয়ে, পিছনে এক মেয়ে, ডান-বাম উভয় সিটে মেয়েরা বসে আছে। তন্ময় দম বন্ধ করে এক হাতে দাঁড়ায় থাকে, ব্যাপক পারফিউমের গন্ধ চারপাশে। এটা আসলে মেয়েদের বাস – ফাল্গুন। কোনভাবে সামনে পিছনে যাবার স্কোপ নাই, একটু ধাক্কা লাগলে আর নিস্তার পাওয়া লাগবে না।
ফোন বাজে – সেই কর্কশ কন্ঠী মেয়ের গলা শোনা যায়।
ঐ তুমি কই?
আমি বাসে।
বাসে কোথায়?
মানে? বাসের মাঝখানে ঝুলে আছি। সামনে-পিছনে কোথাও যেতে পারছি না। পারফিউমের গন্ধে ব...
গর্দভ কোথাকার! আমি জিজ্ঞেস করছি, বাস এখন কোথায় আটকে আছে?
ও আই সি, কাকরাইল, কাকরাইল মোর।
ও আচ্ছা। এটা কোথায়?
মানে? কাকরাইল চেন না? ঢাকায় নতুন আসছ নাকি?
চুপ একদম চুপ। কাকরাইল চেনা লাগবে না আমার। ওখান থেকে আসতে কতক্ষণ লাগবে?
দশ মিনিট লাগতে পারে। আবার দুই ঘন্টা ও লাগতে পারে... ডিপেন্ডস।
ও দশ মিনিটের রাস্তা, আর তুমি জ্যামে পারফিউমের মজা নিতেছো। ঐ তুমি বাস থেকে নামো। হেঁটে আসো, হেঁটে আসো।
তন্ময় লাইন কেটে দেয়। এই ভয়ংকর মহিলার সাথে আপাতত কথা বলার কোন ইচ্ছা নাই।


আধা ঘন্টা পর। তন্ময় পুকুর পাড়ে এক মেয়ের সাথে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়ের পোশাক লাল, চোখ-মুখ ও লাল। সূর্য ঠিক মাথার উপরে, অদ্ভুত আভায় মেয়েটি সহ তার চারপাশ ঝলমল করছে।
তুমি আমাকে চিনলা কিভাবে?
আমি তোমাকে চিনি না, আশেপাশে সিংগেল মেয়ে শুধু তোমাকে দেখলাম।
চাপাবাজি কম করবা, ঐ যে গাছে হেলান দেয়া মেয়েটা একলা ছিল, তারে চোখ পরে নাই? সুন্দরী মেয়ে দেখলে তার কাছে যেতে হবে তাইনা?
দেখো তোমার ত্বকের অবস্থা সুবিধার না, সানস্ক্রীন মেখে আসো নাই?
চুপ একদম চুপ। কতক্ষণ ধরে এদিকে আসছি তুমি জানো? পাক্কা আড়াই ঘন্টা।
আচ্ছা আচ্ছা বুঝলাম। কিন্তু তুমি আসছ কেন? তুমি কে?
আমি কাশফিয়া। কেউ ডাকে কাশফি, কেউ ডাকে ফিয়া। আর বান্দর পোলাপান ডাকে পিয়া পিয়া কইরা।
ওকে বুঝলাম। আমি পুরো নামে ডাকলাম – কাশফিয়া। ঠিক আছে? এইবার বলো – আমার সাথে তোমার সম্পর্ক কি?
সম্পর্ক নাই। হয়ত হবে। এত টেনশানের কি আছে? তুমি পুরুষ মানুষ হয়ে ভয় পাচ্ছ কেন?
আমি ভয় পাইতেছি না। কিউরিয়াস মাইন্ড ওয়ান্টস টু নো।
ওকে তুমি জানতে চাও? আমার চোখের দিকে তাকাও।
তন্ময় মেয়েটির চোখের দিকে তাকায়, বড় বড় টলমল চোখ, চোখের পাপড়ি ঘন আর আছে আন্ধার করা কাজল।
আমার সাথে সারাদিন আজকে ঘুরবা। তোমার কোন কাজ আছে?
নাহ নাই, আমার আজকে অফডে। কিন্তু…
হুমম তোমার ছুটি, চলো ঘুরি। তুমি ঘোরার পার্টনার পাও না, আজকে না হয় আমার সাথে থাকলা। আর আমি কে সেটা যাবার সময় বলব। এখন একটা থ্রিলিং এর মধ্যে থাকো, অসুবিধা কি!


গেটের কাছে এক ভ্যানগাড়ীতে যাবতীয় টক-ঝাল খাবারের আয়োজন হয়েছে। কাশফিয়া খুব উল্লসিত ভঙ্গিতে সেদিকে ছুটে গেল, তন্ময় ঠিক বুঝতেছে না কি করা উচিত। মাথা কাজ করছে না, ঠান্ডা মাথায় ভাবা দরকার – মেয়েটা কে? তার উদ্দেশ্য কি?... ভাবনা চিন্তা করার অবকাশ পাওয়া যাচ্ছে না।
ঐ কি খাবা বলো?
মানে কি! আমি সকাল থেকে না খাওয়া, এখন হাবিজাবি খাওয়া যাবে না।
আরে খাও খাও। একদিন খেলে কিছু হয় না। মামা, আপনি দশ টাকার আম বানানো দেন, বেশী করে ঝাল হবে। ঐ ছেলে, তুমি ঝাল খেতে পারো তো?


তন্ময় কাশফিয়ার পাশে পাশে হাঁটে। ক্ষুধার সাথে সাথে তার মেজাজ খারাপ সমানুপাতিক ভাবে বাড়ছে। আড়চোখে দেখে – মেয়েটা আয়েশ করে কাঁচা আম বানানো খাচ্ছে।
এত রাগ হওয়ার কিচ্ছু নাই, আমি যে অনেকটা সময় তোমার জন্য ওয়েট করছি, কোন ঝাড়িই তো দিলাম না। আচ্ছা কি খাবা বলো। আমি খাওয়াবো।
আমি লাঞ্চ করবো।
ওক্কে স্যার। চলেন নান্নার বিরিয়ানী খাই। ঠিক আছে?
এই প্রচন্ড গরমে বিরিয়ানী-পোলাউ খেতে ইচ্ছে করছে না। ভাত খাব।
আচ্ছা স্যার। কোথায় যাবেন বলেন – কাশফিয়ার চোখে-মুখে কিঞ্চিত বিরক্তি।
চলো নিরবে যাই।


রিকশায় উঠে তন্ময় সাধারণত প্রথমে যে কাজটা করে, দুইপা ফাঁক করে পুরো সিট দখল করে বসে। আজকে সেটা করতে গিয়েই ঝাঁড়ি।
তুমি এত জায়গা নিতেসো কেন? শুকনা একটা মানুষ অথচ পুরো রিকশা দখল করে আছো। ঐ সমস্যা কি তোমার?
তন্ময় একদিকে চেপে সরে যায়।
আরে পড়ে যাবা তো। আরেকটু কাছে আসো। নরমাল হও। তুমি কি লজ্জা পাইতেছ?
ইয়ে, মানে না।


আজব একটা রিকশা পার্টনার পাওয়া গেছে ভেবে কাশফিয়ার আফসোস হয়। আর তন্ময় বোকার মতন হাসে। এলোমেলোভাবে এদিক সেদিক তাকায়। আসলে কোনমতেই সে রিকশায় বসার মধ্যে ব্যালেন্স খুঁজে পাচ্ছে না। দীর্ঘদিনের অনভ্যাস। বেশীরভাগ সময় রিকশাভ্রমনে সে একা থাকে। ঘুরতে গেলে একা, ভার্সিটিতে গেলে একা, অফিসে গেলে একা। রিকশার সিটটাকে তার নিজের রাজত্ব বলে মনে হয়। বন্ধুরা ঘুরতে বের হলেও দুজন ওঠা হয় রেয়ার। তখন থাকে তিনজন। চিপা থেকে বাঁচতে আগে ভাগে সে উপরে উঠে বসে। রিকশার ঐ জায়গাটা তার বিশেষ প্রিয়। উপর থেকে যেকোন সৌন্দর্য সবার আগে চোখে পড়ে এবং বাকীদের মাঝে পাস করা যায়।


কাশফিয়া হঠাত করে চুপ, স্মার্ট ফোন নিয়ে ব্যস্ত। তন্ময় ভাবে, কে এই মেয়ে! চেহারা চেনা অচেনা দুটোই মনে হচ্ছে। কোন ফেইসবুক ফ্রেন্ড, হয়ত ছদ্মনামে আছে – অঝোর শ্রাবণ, মেঘের রাজকন্যা, জোৎস্নার জলছায়া, বৃষ্টির রং, শিশিরের শব্দ, মায়াবন বিহারিণী – কত বাহারী নাম, যে কেউ হতে পারে। কখনো হয়ত খেয়াল হয়নি অথবা কোন ছবি দেয় নাই এমন কেউ।


নিরব থেকে ভরপেট খাওয়া দাওয়ার পর এখনকার লোকেশন ধানমন্ডি লেকের পারে কোথাও। তন্ময়ের অস্বস্তি ভাবটা কমে গেছে, সুন্দরী একটা মেয়ের পাশে বসে তার এখন ভাল-লাগা অনুভূতি হচ্ছে। অদ্ভুত একটা দিন, আনপ্ল্যানড, অজানা এবং কল্পনাময়! প্রকৃতি ও ঠান্ডা হয়ে আসছে। আকাশে আস্তে আস্তে মেঘ জড়ো হচ্ছে, রোদ আর বিরক্তিকর গরম হারিয়ে গেছে। চারপাশে আশ্চর্য প্রেম প্রেম ভাব।

একটু দূরে ভার্সিটি পড়ুয়া একদল ছেলে মেয়ে। তাদের একজন গিটার বাজিয়ে ফোক গান ধরেছে, মায়াস্পর্শী গান –

নিঠুর কালিয়া সোনারে সোনা
গত নিশি কোথায় ছিলে

আসিবে শ্যাম বলে তুমি
কথা দিয়া ছিলে
রজনি পোহাইয়া গেল
তুমি না আসিলে

সারা নিশি জাগিয়া
মালাটি গাঁথিয়া
ছিঁড়ে ফেলেছি সকালে
গত নিশি কোথায় ছিলে


আফা কই যামু?
বসুন্ধরা সিটি যাও।
বিচক্ষণ রিকশাওয়ালা। সে জানে কার কাছে গন্তব্য জানতে হবে। উদভ্রান্ত যুবক কখনো কিছু বলতে পারবে না।
ঐখানে কি করবা?
মুভি দেখব আমরা, দেহরক্ষী – কাশফিয়া দাঁত বের করে হেসে বলে।
উহু, এই সিনেমা মেয়েদের নিয়ে দেখা যাবে না। অন্য মুভি দেখব আমরা।
কেন অসুবিধা কি? ক্যাপ্টেন ববি কি আমার থেকে হট? – দুস্টামি তার চোখে মুখে খেলা করে।

তন্ময় আকাশের দিকে তাকায়। অবস্থা সুবিধার না। মধ্যদুপুরের সেই আবহাওয়ার কিছুমাত্র অবশিষ্ট নাই। উল্টা এমন মেঘ করেছে যে ভরবিকেলে সন্ধ্যা। আকাশ আন্ধার, শহর ডুবানো বৃষ্টি আজকে নামবে, নিস্তার নাই।

বসুন্ধরাতে দেহরক্ষী আসে নাই। তন্ময় ভাবে, যাক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়া লাগল না। কাশফিয়া হতাশ। কি আর করা - চোরাবালির টিকিট কেটে ঢুকে গেল তারা। সিনেমা শুরু হয়। তন্ময়ের ঐদিকে মনে দেয়ার কারণ নাই, জীবনে কোন মেয়েকে সাথে নিয়ে সিনেমা হলে যেই ছেলে আসেনি সেই ছেলে এক অচেনা সুন্দরীর সাথে বসে সিনেপ্লেক্সে মুভি দেখতেছে – লাইফ ইজ রিয়ালি সারপ্রাইজিং!
রাত নয়টা ক্রস করেছে। প্রায় নয়ঘন্টা তারা একসাথে ছিল। তারা এখন দাঁড়িয়ে আছে বসুন্ধরা সিটির সামনে যেদিক দিয়ে গাড়ী বের হয়।
তন্ময়, তুমি বেশ ভাল একটা ছেলে। কিন্তু জীবনে শুধু ভাল হয়ে থাকলে চলবে না। তোমাকে অ্যারোগেন্ট হতে হবে। তোমাকে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে, রিস্ক নিতে শিখতে হবে। রুটিনবয় হয়ে থাকলে লাইফ চলবে কিন্তু এনজয় করতে পারবা না।
তন্ময় কিছু বলে না, শূন্য দৃষ্টিতে কাশফিয়ার মুখের দিকে চেয়ে থাকে।
তুমি জানতে চাও আমি কে?
হুমম।
আমি কেউ না। আমি একটা বিভ্রম। তুমি তোমার বোরিং লাইফ থেকে বেরিয়ে আসো, আমাকে দেখতে পাবে। আমি তোমার পাশে আছি, এনিটাইম!

মাথার মধ্যে সব শূন্য শূন্য লাগে, সারাটা দিন ধরে যা হল সব অবাস্তব, আসলে কিছু ঘটে নাই? তন্ময় সাহস করে হাত বাড়িয়ে কাশফিয়ার হাত ধরে, বেশ ঠান্ডা একটা হাত। পাঁচটি আংগুলে গাঢ় করে লাল রঙ্গের নেইলপলিশ দেয়া। হাত ধরে রেখে সেই আন্ধার করা কাজল দেয়া চোখের দিকে তাকিয়ে তন্ময় শুধু বলতে পারে,
কাশফিয়া, কল্পনাময় মায়াবী একটা দিন উপহার দেয়ার জন্য তোমাকে অনেক থ্যাংকস।

ছাই রঙা একটা গাড়ী এসে পাশে দাঁড়ায়। কাশফিয়া গাড়ীতে উঠলে আস্তে করে সেটা বেরিয়ে যায়।



কালো মেঘ জমেছে আকাশে
এখনি অঝরে বৃষ্টি ঝরবে
তবু পাই না তোমাকে খুঁজে
পাই না তোমায় পাশে

মেঘ ভেঙ্গে অবিরাম বৃষ্টি ঝরে
সেই বৃষ্টির মাঝে একাকী দাঁড়িয়ে
সময় কেঁটে যায়, বৃষ্টিও থেমে যায়
আমি হায় তোমারি অপেক্ষায়
তবু পাই না তোমাকে খুঁজে
পাই না তোমায় পাশে
… …



[গানের কথা সংগৃহীত]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন