দুঃখবিলাসী


কিছু কিছু মানুষ থাকে দুঃখবিলাসী টাইপের। তারা দুঃখকে মনের ভেতর সযতনে লালন করে। চেহারায় সবসময় একটা দুঃখী দুঃখী ভাব ফুটিয়ে তোলে আর কারো সাথে কোন কথা হলে বলে, “আমার না খুব মন খারাপ।” :(( রেডিও জকিরা যেন এদের অপেক্ষাতে বসে থাকে সারাক্ষন আর চান্স পেলেই বাজিয়ে দেয় বাপ্পাদার গাওয়া দুঃখবিলাসীদের জাতীয় সঙ্গীত, “আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে, তুমি আনমনে বসে আছ, আকাশপানে দৃষ্টি উদাস … … ”:D

আত্মহত্যা করার ফ্যান্টাসী তাদের মধ্যে দেখা যায়। মাঝেমধ্যেই বলে, “কিচ্ছু ভাল্লাগেনা। আর বাঁচতে ইচ্ছে করে না। কবে জানি সুইসাইড করি।” :|| /:)

দুঃখবিলাসীরা রাত জাগে আর দুপুরবেলায় বেঘোরে ঘুমোয়। নিশুতি রাতে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলে, “ইস্‌ কত রাত ঘুমাইনা!!” ইন্সমনিয়ায় ভোগে। তবে ঘুমের ঔষধ খায় না, ঔষধে বড্ড ভেজাল। :-*

ভীষন সাহসী হয় তারা। রাতদুপুরে একলা একলা হাঁটে কিংবা ছাদের রেলিং এ উঠে বসে থাকে। ;) নিজের সাথে কথা বলে। জাগতিক সব ব্যাপারেই হতাশাচ্ছন্ন। কি যেন নেই, কিসের যেন অভাব।

আপনি ভাবতে পারেন, ছ্যাঁকা খাইছে এইজন্যে মনে এত দুঃখ। ঘটনা কিন্তু পুরো উলটো। এরা বরং ছ্যাঁকা দিতে ওস্তাদ। একেকটা প্রেম আসে আর সে মহা উৎসাহে ছ্যাঁকা দেয়। তারপর লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদে আর ভাবে, ইহা আমি কি করিলাম!! :P:P

আর্থিক সমস্যার কারনে মন খারাপ। পুরো ভুয়া কথা। কোটিপতিদের কোন গুনধর পুত্রকে হয়ত দেখবেন অজানা কোন দুঃখে নেশার পথে গিয়েছে। অন্যদিকে যে ছেলেটা দিনভর টিউশনি করে নিজের পড়ার খরচ জোগায় আবার রাত জেগে পড়ে, দুঃখ নিয়ে ভাবাভাবি করার তার সময় কই? |-)

স্টুডেন্ট হলে মনে করতে পারেন, রেজাল্ট খারাপ। মন কেমনে ভাল থাকবে? চাকরী-বাকরী কেমনে হবে এই ভেবে কষ্ট পাচ্ছে। এই কারনে আমার নিজেরো মন খারাপ থাকে। তখন ফেইসবুকে উদ্ভট কুইজ খেলে, মুভি দেখে কিংবা লেখালেখি করে মন ভাল করার চেষ্টা করি। সেইসময়টা পড়াশুনা করলে কিংবা ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিলে যে আরো ভাল হয় সেটা আমাকে কে বোঝাবে? /:)

বলতে পারেন, মেয়েটি হয়ত কালো। তাই এত কষ্ট। আসলে কিন্তু সেটা না। সমীক্ষায় দেখা গেছে, সুন্দরীরা বেশীমাত্রায় দুঃখবিলাসী। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে আর এটাসেটা ভেবে মন খারাপ করে, আমার মুখটা ফোলাফোলা লাগছে কেন? বুড়োবুড়ো লাগছে কেন?? মুটিয়ে গেলাম নাকি??? :(( :(( :(( কেউ তাদের জন্য ফিদা হলে ভাব দেখায় আবার না হলেও মুখ বাঁকিয়ে বসে থাকে। সবসময় একটা ভাবজ ধরে রাখতে গিয়ে শুধু শুধু কষ্ট পায়।

আসলে দুঃখবিলাসীতা এক ধরনের রোগ। এই রোগের সমাধান কি? আমার মতে, মেয়ে হলে যত তাড়াতাড়ি পারা যায় বিয়ে দেয়াটাই ভাল। কখন যে এরা কি করে ফেলে তার নাই ঠিক। দরকার হলে বাচ্চাকাচ্চা সহ গ্রাজুয়েশন শেষ করবে। নো প্রবস্‌। B-)

আর দুঃখবিলাসী ছেলে হলে আর তার বয়স পঁচিশোর্ধ হলে একই চিকিৎসা অর্থাৎ শুভস্য শীঘ্রম। :P তবে পুত্রের বয়স পঁচিশের নিচে হলে তাকে ঘাড় ধরে বের করে দিতে হবে, “যা ব্যাটা চড়ে খা।” X(( মাথার উপর ছাঁদ না থাকলে আর পকেটে পয়সা না থাকলে দুঃখ দুঃখ ভাব কোন খান দিয়ে যে পালাবে!!!

সত্যিকারের দুঃখী মানুষেরা লেখাটি সিরিয়াসলি নিবেন না আশা করি। :P

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন